বর্ষা বিদায় নিয়েছে। হেমন্তের সকালে বেশ ঠান্ডা বাতাস দিচ্ছে। বাংলার ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে। এই ঋতু পরিবর্তনের মুখে বাচ্চারাই ঘন ঘন শরীর খারাপে ভোগে। এই সময় কোন-কোন রোগের প্রকোপ বেশি এবং তার হাত থেকে সন্তানকে সুস্থ রাখবেন কী ভাবে তার টিপস দিচ্ছেন কয়েকজন শিশু চিকিৎসক। তাঁরা বলছেন, এই ঋতু পরিবর্তনের মুখে, বিশেষত এমন বর্ষার পর বাচ্চাদের মধ্যে মূলত তিন ধরনের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এক, সর্দি-কাশি খুব কমন। শ্বাসজনিত সমস্যা, নিউমোনিয়া, ফুসফুসে সমস্যা দেখা দেয়। দুই, বৃষ্টির জল থেকে পেটের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। নোংরা জল থেকে হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, জন্ডিস, পেট খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও হতে পারে স্ক্রাব টাইফাস ও ডেঙ্গি।
- এই মরশুমে জ্বর-সর্দি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। বাড়িতে যদি কারও সর্দি-কাশি হয়, তাহলে বাচ্চার কাছে যাবেন না। বাচ্চার কাছে গেলেও মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। একইভাবে, আপনার বাচ্চার যদি সর্দি-কাশি হয়, তাকে কয়েক দিনের জন্য স্কুলে পাঠাবেন না। নিয়মিত হাত ধোয়াবেন।
- বৃষ্টি জমা জল থেকে রোগ জীবাণু ছড়ায়। আর এই মরশুমে পেটের সমস্যা দেখা দেয়। বাচ্চাকে সবসময় ফোটানো জল খাওয়ান। জল ফুটিয়ে নেওয়ার পরে অবশ্যই তা ছেঁকে নেবেন। এ ছাড়া খেয়াল রাখুন যে, বাচ্চার পেটে কোনও ভাবেই যেন স্নান ও মুখ ধোয়ার জল প্রবেশ না করে।
- একটি বিশেষ পোকার কামড়ে স্ক্রাব টাইফাস ব্যাকটেরিয়া মানুষের দেহে প্রবেশ করে। এই পোকা বগল, কুঁচকি, কানের পিছনে কামড়ায়। এর উপসর্গ হল জ্বর। অবস্থার অবনতি হলে মৃত্যু অবধি হতে পারে। স্ক্রাব টাইফাসের হাত থেকে সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে হলে আপনাকেই কোমর বেঁধে মাঠে নামতে হবে। বাড়ির সর্বত্র নিয়মিত পরিষ্কার করুন। বাচ্চাকে ভালো জীবাণুমুক্ত সাবান দিয়ে স্নান করান। আর এই বৃষ্টির পর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতেও পারে। সেক্ষেত্রে সন্তান ও পরিবারের বাকি সদস্যকে সুস্থ রাখতে আপনাকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। বাড়ির আশেপাশে কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। বারান্দা, ছাদ কোথাও যেন জল না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখুন। জ্বর হলে ডাক্তার দেখানো জরুরি।