আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। হিন্দু বাঙালিরা ঘরে ঘরে লক্ষ্মীর আরাধনায় ব্যস্ত। লক্ষ্মী বিনা সারা জগৎ অচল। আর লক্ষ্মীও বেশ চঞ্চলা। কোথাও অধর্ম, পাপ, অহংকার দেখলে লক্ষ্মী সেখানে থাকে না। পুরান বলছে, এমনই অহংকার দেখে লক্ষ্মী একবার স্বর্গ ত্যাগ করেছিলেন। কথিত আছে একবার দেবরাজ ইন্দ্রকে পদ্মফুলের মালা নিবেদন করেছিলেন ঋষি দুর্বাশা। মুনি-ঋষিদের মধ্যে খানিকটা রগচটা ও রাগী বলেই পরিচিত দুর্বাশা। এদিকে ঋষি দুর্বাশার নিবেদন করা পারিজাত মাল্য গ্রহণ না করে অহংকারের বশে তা নিজের বাহন ঐরাবতের দিকে ছুঁড়ে দেন দেবরাজ। ঐরাবতের সেই মালার সম্মান করার বদলে নিজের পা দিয়ে তা ডোলে দেন। দুর্বাশা প্রবলভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিশাপ দেন যে স্বর্গরাজ্য এবং শ্রী নিয়ে দেবতাদের এত অহংকার তাই আর থাকবে না তাঁদের কাছে। ব্যাস লক্ষ্মী বিদায় নেন স্বর্গ থেকে।
তখন স্বর্গে এক অ-রাজক পরিস্থিতি তৈরী হয়। লক্ষ্মীহীন হবেন দেবতারা। ঋষি দুর্বাশার এই অভিশাপের কোপ গিয়ে পড়েছিল ত্রিদেবের উপরেও। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর হয়ে পড়েছিলেন শ্রী হীন। তাঁদের স্ত্রীরাও তাঁদের থেকে দূরে সরে যায়। স্বর্গরাজ্য তার জৌলুস হারায়। ম্লান হয়ে পড়ে বিষ্ণুর প্রিয় বসতি বৈকুন্ঠও। লক্ষ্মীদেবী সমুদ্রের তলায় নির্বাসনে যান। এরপরেই নিজেদের পাপের প্রায়শ্চিত্য করে হারানো গৌরব ফিরে পেতে চান দেবতারা। শেষে দেবতারা ও অসুর মিলে শুরু করেন সমুদ্রমন্থন। সেই সমুদ্রমন্থনেই উঠে এসেছিল নানা দামী মণিমানিক্য, কল্পতরু গাছ, অমৃত, গরল বা বিষ। সমুদ্রমন্থনের শেষেই রক্ষাকর্তা বিষ্ণু ফিরে পান তাঁর অর্ধাঙ্গিনী লক্ষ্মীকে।