ভাবতে অবাক লাগে এখন থেকে হাজার বছর আগে আমাদে বৈদিক ঋষিরা দীর্ঘ গবেষণা করে রচনা করেছিলেন অথর্ব বেদ – যা আসলে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। সেই সময়ই তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন, শীতের ঠিক আগে শরীরে কিছু ঔষধী প্রবেশ করাতে না পারলে আসন্ন শীতের সঙ্গে শরীর লড়াই করতে পারবে না। তাই তাঁরা এই দিন ১৪ শাক খাওয়ার নিদান দিলেন। ধৰ্মীয় অনুষঙ্গ যুক্ত থাকার জন্য মানুষ তা পালন করে আসছেন। আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এই সময় ১৪টি শাক শরীরে একটি অতিরিক্ত বুষ্টার তৈরী করে।
১৪ শাকের মধ্যে থাকে ওল শাক ও বেতো শাক। ওল গাছের পাতা, ডাল লিভারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। রক্ত আমাশা সাড়াতে কার্যকরী। বেতো শাকে আছে আট ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ভিটামিন। অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ত্বকের রোগে খুব উপকারী এই শাক। কেঁউ শাক, যা খাওয়া হয় কালী পুজোর আগের দিন। এই শাকের রস বাতের রোগ ও কুষ্ঠ রোগের সঙ্গে লড়তে বেশ কার্যকরী। শরীররে হজম শক্তিও বাড়ায়। সর্ষে শাকের নাম কিন্তু আছে এই তালিকায়। সর্ষে শাক ভিটামিন, লোহা ও ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস। বহু স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর নিমপাতা ভেষজ হিসাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ ত্বকের যত্ন নিতে এবং সুগার রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। শালিঞ্চ শাক খেতে হয় এই দিন। ত্বক, চোখ, চুল ও ডায়ারিয়ার রোগীদের জন্য এই শাক বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও আছে পলতা পাতা বা পটল পাতা খাওয়ার চল রয়েছে। এই শাক শরীরে রক্ত বাড়াতে ও শোধন করতে বেশ উপযোগী। গুলঞ্চ শাক সুগার, যক্ষ্মা, বাত, গানোরিয়ার মতো একাধিক দুরারোগ্য রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বেশ উপকারী এই শাক। জয়ন্তী শাক, হেলেঞ্চা শাক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। শুষনি শাক রক্তের চাপ কমায় আর ঘেঁটু শাক বাত, জ্বর, চুল পড়া, হাঁপানি, সর্দিকাশি, লিভারের অসুখে বেশ উপকারী। আর আছে শতপুষ্প শাক ও কালকাসুন্দে শাক – যা বহু গুনের আধার।