কিমের বুলেট প্রুফ ট্রেনের রহস্য 

বড়ো রহস্য কিমের বুলেট প্রুফ ট্রেনের। মালগাড়ির গতিতে চলে কেন জানেন? বিমানে কোন আতঙ্ক? কিমের এই পার্সোনাল ট্রেন একেবারে ভয়ঙ্কর। ভেতরে ঠাসা খতরনক সব অস্ত্র। ট্রেনের ভিতর এতোগুলো গাড়ি? আগে পিছে আরো ট্রেন। বিশেষ এক বাহিনী ছেয়ে থাকে গোটা ট্রেনে। ধীর গতির কারণ জানলে বুঝবেন কিম জঙ  উনের জীবনের কত দাম। লাক্সারী জীবন যাপনের একদম চূড়ান্ত নমুনা।

  পুতিনের মুখোমুখি কিম। বড়ো কিছু ঘটবে। অলরেডি ২০ ঘন্টায় ১১৮০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে রাশিয়ার বন্দর শহর ভ্লাদিভস্কোতে পৌঁছেছে উত্তর কোরিয়ার কিম জঙ উনের পার্সোনাল ট্রেন। ট্রেনের গা খুবই শক্তিশালী ধাতুর পাত দিয়ে মোড়ানো। যা রকেট গুলিকেও আটকে দিতে পারে। শুধু নিরাপত্তার দিক থেকেই নয়, ওই ট্রেনটা অন্যান্য সব কারনেও অন্যান্য সব ট্রেন থেকে আলাদা, ইউনিক ও ভীষণ স্পেশাল। এতে পাওয়া যায় দারুন সব খাবার। ফরাসী ওয়াইন, উন্নত মানের গলদা চিংড়ি থেকে শুরু করে রাশিয়ান, চাইনিজ, করিয়ান, জাপানিজ, ফ্রেঞ্চ যে কোনো ধরনের খাবারের অর্ডার দেওয়ার সুযোগ আছে এই বুলেটপ্রুফ ট্রেনে।

  আছে বিনোদনের ভরপুর ব্যবস্থা। ২০০৯ সালে দক্ষিণ করিয়া জানিয়েছিল, সাজোয়া এই ট্রেনটিতে ৯০টি কামরা সবসময় সজ্জিত এবং রেডি রাখা হয়। এইসব বগিতে অন্যান্য যান বহন করা হয়। এরমধ্যে কিমের ব্যক্তিগত অস্ত্র সজ্জিত দুটো মারসেটিজও থাকে। এ ছাড়া ওই ট্রেনের ২০ টা বগি সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ। গাঢ়  সবুজের মধ্যে হলুদ ডোরা কাটা এই ট্রেনটিতে একাধিক কনফারেন্স রুম, ছোট থিয়েটার, রেস্টুরেন্ট সহ একাধিক বেডরুম রয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনটাতে স্যাটেলাইট যোগাযোগের পাশাপাশি বড়ো আকারের টেলিভিশন সেটও সংযুক্ত রয়েছে বিভিন্ন কামরায়।

কিমের নিরাপত্তার কারণে ট্রেনটার মধ্যে এক বিশেষ বাহিনী থেকে।এই বাহিনী অন্যান্য প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তা দেওয়ার থেকে অনেক অংশে বড়ো ও আলাদা। যে রুটে কিম এই ট্রেন করে যান সেই রুট আদৌ নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে ওই বুলেট প্রুফ ট্রেনটির আগে আরেকটি ট্রেন থেকে। না, এখানেই শেষ নয়। ওই ট্রেনের পিছনে থেকে তৃতীয় আরেকটি ট্রেন। যে ট্রেনে বিভিন্ন কর্মী ও দেহেরক্ষি থেকে। অন্যান্য সম্ভাব্য আক্রমনের দিকে নজর রাখে তারা। ট্রেনটার কোরিও নাম তাই ‘ওয়াং জো’ যার বাংলা অর্থ সূর্য।

  এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে বিমান বা আধুনিক গাড়ি ছেড়ে কেন ট্রেন যাত্রাকে প্রায়োরিটি দেয় উত্তর কোরিয়ার নেতারা। জানিয়ে রাখি,দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন যাত্রার রীতি চালু করেন কিম জং আনের বাবা কিম ইল সং। তিনি পার্সোনাল ট্রেনে চড়েই  ভিয়েতনাম ও পূর্ব ইউরোপ সফর করেছিলেন। বলা হয় কিম জঙ এর বাবা কিম জঙ ইল বিমানে চড়তে  ভয় পেতেন। তাই এই ট্রেনে ভ্রমনেকেই প্রাধান্য দিতেন তিনি। ২০০১ সালে তিনি ১০ দিন ধরে যাত্রা করে মাস্ক পৌঁছেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে। অবশ্য ২০১১ সালে এই ট্রেনের ভিতরেই হার্ট এটাকে মৃত্যু হয় কিম জঙ উনের বাবার। রাশিয়ার এক সামরিক কমান্ড যিনি ২০০১ সালে এমন ট্রেনে ভ্রমন করেছিলেন। তিনি তার আত্মাজীবনিতে লিখেছেন ট্রেনের আভিজাত্যের বিষয়ে।তিনি বলেছেন, পুতিনের ব্যক্তিগত ট্রেনে এইসব সুযোগ সুবিধা নেই যা উত্তর কোরিয়ার নেতাদের এই স্পেশাল ট্রেনে রয়েছে। কিন্তু এতো সুযোগ সুবিধা থাকার পরেও এই ট্রেনের গতি মারাত্মক রকমের কম। একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। এই আধুনিক যুগে যখন লন্ডনের উচ্চ গতির ট্রেনগুলো ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার,জাপানের সিং টঙসের বুলেট ট্রেন ঘন্টায় ৩২০ কিলোমিটার বেগে চলে তখন কিম জঙ উনের এই অদ্ভুত ট্রেনের গতিবেগ কত জানেন? প্রতি ঘন্টায় মাত্র ৫০ কিলোমিটার। উত্তর কোরিয়ার পুরোনো রেল নেটওয়ারকের কারণেই কী যাত্রা এতো লম্বা হয়,নাকি এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কোনো কারণ। বলাহয় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাই এর প্রধান কারণ। হ্যাঁ, আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রে ঠাসা ট্রেনটা ভারী হয়ে যাওয়ার কারণে এই ট্রেনটা ধীর গতিতে চলে। অন্যান্য দিক থেকে যেকোনো ট্রেনকে এই ট্রেনটা বলে বলে টেক্কা দেওয়ার ক্ষণটা রাখে। হতেই হবে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিং জঙ এর পার্সোনাল লাক্সসারিয়াস বুলেট প্রুফ ট্রেন বলে কথা।

Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Popular News

Latest News

Donec mi nisi, faucibus id enim id, ultrices fringilla felis. Praesent dictum mauris sit amet metus bibendum pulvinar. Nullam odio nisl, elementum a sodales sit amet, lobortis imperdiet lectus. Praesent id feugiat odio. Nulla facilisi. Vivamus neque libero, sagittis et molestie quis, rutrum auctor neque.

Donec mi nisi, faucibus id enim id, ultrices fringilla felis. Praesent dictum mauris sit amet metus bibendum pulvinar. Nullam odio nisl, elementum a sodales sit amet, lobortis imperdiet lectus. Praesent id feugiat odio. Nulla facilisi. Vivamus neque libero, sagittis et molestie quis, rutrum auctor neque.

Donec mi nisi, faucibus id enim id, ultrices fringilla felis. Praesent dictum mauris sit amet metus bibendum pulvinar. Nullam odio nisl, elementum a sodales sit amet, lobortis imperdiet lectus. Praesent id feugiat odio. Nulla facilisi. Vivamus neque libero, sagittis et molestie quis, rutrum auctor neque.