গত কয়েক বছর ধরে বাংলার মানুষ কালো টাকার পাহাড় দেখেছেন। এবার নতুন সংযোজন সঞ্জয় সুরেখা। দক্ষিণ কলকাতার ম্যান্ডেভিল গার্ডেনের বাড়িতে ব্যবসায়ীকে জেরা পর্ব শেষে প্রতারণার টাকায় কেনা ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি, সাড়ে চার কোটি টাকার হিরে, প্ল্যাটিনাম ও সোনার গয়না, সম্পত্তি সংক্রান্ত ১০০টি ডিড সহ অন্যান্য নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বুধবার বিচারভবনের ইডির বিশেষ আদালতে সঞ্জয় সুরেখাকে হাজির করে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতের আর্জি জানায় তদন্তকারী সংস্থা। আদালত তা মঞ্জুর করে। খবরে প্রকাশ,এই সঞ্জয় সুরেখা বেনামি সংস্থা বানিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মাসাৎ করেছে। কিন্তু সেই টাকা কোথায়? বৃহস্পতিবার ইডি সূত্রে জানা গেছে, যে বিশাল পরিমাণ অর্থ ঋণ বাবদ নেওয়া হয়েছিল, তার সিংহভাগই (১১৪৭৪.৪৮ কোটি টাকা) দুবাই, থাইল্যান্ড, মরিশাস সহ পশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি দেশে পাচার করা হয়েছে। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির এই মামলায় সঞ্জয় সুরেখার সংস্থা ‘মেসার্স কনকাস্ট স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড’-এর আরও তিন ডিরেক্টরকে জেরা করছে তদন্তকারী সংস্থা।
ইতিমধ্যে তার সম্পত্তির বহর দেখে অফিসারদের চক্ষু চরকগাছ। তদন্তকারীরা বলছেন, শিল্পপতি সঞ্জয় সুরেখার চারটি কারখানা রয়েছে। দু’টি এরাজ্যের সোদপুর এবং বাঁকুড়ায়। বাকি দু’টি ওড়িশার ঝাড়সুগদা ও অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামে। এই কারখানাগুলিকে সামনে রেখে ২২টি ‘ভুয়ো’ কোম্পানির নামে গত ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৭’র নভেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় ওই বিশাল পরিমাণ অর্থ ঋণ নিয়েছিলেন সুরেখা ও তাঁর সহযোগীরা। রাষ্ট্রায়ত্ত এসবিআই সহ তাদের কনসর্টিয়ামের অন্তর্গত মোট ১২টি ব্যাঙ্ক থেকে কখনও লেটার অব ক্রেডিট, কখনও ক্যাশ ক্রেডিট ও টার্ম লোন বাবদ ঋণ নেওয়া হয়। বাংলার ইতিহাসে এই ব্যবসার নামে এই বিপুল প্রতারনা আগে দেখা যায় নি।