ভারতীয় ধৰ্মীয় সংস্কৃতিতে ‘শব্দব্রহ্ম’ বলে একটি শব্দ আছে। অর্থাৎ শব্দই ব্রহ্ম, শব্দই ভগবান। তাই কোন শব্দ কোথায় ও কিভাবে ব্যবহার করবো, তা আমাদের শিখতে হবে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের রাজনীতিকদের একটা অংশ সেই শব্দব্রহ্ম শব্দটির অর্থ বোঝেন না। আর সেই কারণেই রাজ্যের মন্ত্রী, কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র একজন মহিলাকে ‘মাল’ বলে সম্বোধন করেন, যা বাংলা অভিধানে ‘আপশব্দ’ বলেই পরিচিত। আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনে হাড়োয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রবিউল ইসলামের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। সেখানেই তিনি সন্দেশখালি ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘দাড়িওয়ালা’ এবং বিজেপি নেত্রী রেখা পাত্রকে ‘হেরো মাল’ বলে সম্বোধন করেন। স্বাভাবিক কারণেই এই বিষয়টিকে বিজেপি খুব ভালো চোখে দেখছে না।
বিরোধী দলনেতা এই নিয়েও তীব্র উস্মা প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, “অত্যন্ত আপত্তিকর! রেখা পাত্রকে অপমান করার কোনও অধিকার নেই মমতা সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের। একজন মহিলাকে উল্লেখ করার সময় তিনি জঘন্য শব্দ ‘মাল’ উচ্চারণ করছেন। এর জন্যে কঠোর ভাষায় তাঁর তিরস্কার করা উচিত। একজন মহিলাকে সম্বোধন করার সময় এই ধরনের অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করার জন্য আইনের আওতায় পদক্ষেপ করা উচিত তাঁর বিরুদ্ধে। – – – এছাড়া, একজন ব্যক্তি যিনি মহিলাদের প্রতি এমন অবজ্ঞাপূর্ণ হতে পারেন, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও অসম্মানজনক হবেন, এটাই আশা করা যায়। তাঁর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রায়শই তা করে থাকেন।” খুবই কাতর হয়ে রেখা পাত্র সাংবাদিকদের বলেন,”আমাকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, সেটা খুবই নিন্দনীয়। অপমান করা হয়েছে, তা আমার মতো খেটে খাওয়া পরিবারের মেয়েকে অপমান করা হয়েছে। এই অপমান গোটা সন্দেশখালির মা-বোনেদের অপমান।” বাংলার রাজনীতি থেকে কবে দূর হবে এই আপভাষা সংস্কৃতি? এখন সেই প্রশ্ন করছেন নাগরিক মহল।