সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মানুষ যখন মেতে ওঠেন, তখন কোনোভাবেই তাঁকে আটকানো যায় না। সৃষ্টি তো তাঁর মনের মধ্যে। দিনহাটার কলেজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। তিনি তাঁর বাড়ির বাগানকে তৈরি করেছেন এক সুন্দর বাগান রূপে। যেখানে রয়েছে রকমারি ফুলের গাছ, বিভিন্ন ধরনের পাখি, কৃত্রিম জঙ্গল এবং মাছ ভর্তি পুকুর। তাঁর এই বাগনে ঢুকলেই মনে হবে কোনও বড় পার্কে ঢুকে পড়েছেন। ২০০৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে অবসর নেন তিনি। অবসর গ্রহণের পরই থেকে ধীরে ধীরে বাড়িকে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করেন। আমরা গিয়েছিলাম তাঁর বাগানে। তিনি জানালেন, বাগানে ডালিয়া, হাইব্রিড গাঁদা, পিটুনিয়া, ডায়েনথাস, প্যানজির মতো বিভিন্নরকম ফুল রয়েছে। ফুল বাগান থাকবে, অথচ সেখানে প্রজাপতি থাকবে না, তা কীভাবে হয়? তাই নিজের হাতেই থার্মোকল এবং রং দিয়ে প্রজাপতি তৈরি করে বাগানের মাঝে বসিয়ে দিয়েছে সকলের নজর আকর্ষণ করতে। বাগানের মাঝেই রয়েছে পাখিদের জন্য আলাদা জায়গা। সেখানে কিচিরমিচির করে বেড়াচ্ছে জাভা, ফ্রিঞ্চ, লাভবার্ড, বদরি পাখি। বাগানের চারিপাশ বাঁশের টুকরো দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। সব মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতি বান্ধব এক পরিবেশ।
তিনি আরোও জানান, বাগানের পিছন দিকে রয়েছে শতাধিক কৃত্রিম পায়রা। প্রত্যেকটি পায়রা নিজের হাতে তৈরি করেছেন তিনি। পুকুরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এই সাজানো বাগান দেখতে লোকজন ভিড় করেন তাঁর বাড়িতে। ইচ্ছাশক্তি থাকলে বয়সটা যে কোনও ব্যাপার না, সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন। তিনি প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চান। তাই সৃজনশীলতা আর শৈল্পিক চিন্তাভাবনা দিয়ে নিজের বাড়িতেই বানিয়েছেন এই অভয়ারণ্য। তার বাড়ির এই অভয়ারণ্য এবং বাগান বহু মানুষের মানসিক প্রশান্তি খোঁজার জায়গা। এলাকার সকল মানুষ তাঁর গুণমুগ্ধ। প্রসঙ্গত শিক্ষক হিসাবে তিনি ছিলেন বিশেষ প্রতিভার অধিকারী। তাই একটা সময় রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার তিনি পেয়েছিলেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাত থেকে সেই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি।