বাংলার গ্রাম গঞ্জে, নদী নালার পাশে গজিয়ে ওঠা থানকুনি পাতার প্রকৃত মর্ম আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি। এটি যথার্থ অর্থেই মহৌষধ। বাঙালির অতি পরিচিত শাকসবজির মধ্যে থানকুনি পাতার কথা কেনা শুনেছে। ঠাকুমাদের আমলে প্রায়ই এই পাতার পদ থাকত পাতে। এমনকী এখনও অনেকে এই পাতার নানা পদ খেতে ভালবাসেন। সাধারণত পুকুর পাড় বা জলাশয়ে এ পাতা দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষই এখন পেটের সমস্যা হলে ওষুধ খেয়ে তা সারিয়ে ফেলেন। বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকে। তবে ওষুধের পাশাপাশি কিছু ভেষজ উপাদানও পেটের সমস্যা দূর করে। এর মধ্যে অন্যতম হল থানকুনি পাতা। এটি যথার্থ অর্থে মহৌষধ এর কাজ করে।
আমরা সবাই হয়তো জানিনা, শুধু পেটের সমস্যা বললে কম বলা হয়, টাইফয়েড, ডায়ারিয়া, কলেরার মতো একাধিক রোগ সারাতে পারে এই থানকুনি পাতা। নিয়মিত এই পাতার রস খেলে আরও বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি আরও ভাল হয়। এটি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়। পাশাপাশি পেন্টাসাইক্লিক ট্রিটারপেন্স নামের একটি উপাদানের ঘাটতি কমায়। এতেই মস্তিষ্কের কোষগুলি আরও ভালভাবে কাজ করে। উন্নত হয় স্মৃতিশক্তি। বয়স্ক মানুষদের জন্য এটি সমানভাবে কার্যকরী। যদি নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে বেশি বয়সে অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের আশঙ্কা কমানো যায়। তাই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিয়মিত থানকুনি পাতা খাবার পরামর্শ দেয়। এ ছাড়াও রোজকার কাজের চাপ ও ব্যক্তিগত জীবনের জটিলতা থেকে অনেক সময় মানসিক চাপ তৈরি হয়। এই ধরনের চাপ একটা সময় কাজেও প্রভাব ফেলতে শুরু করে। থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত স্ট্রেস কমিয়ে এটি মানসিক অবসাদ থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে অন্তত ২/৩ দিন থানকুনি পাতা খান।