কালো হয়ে যাবার ভয়ে গায়ে রোদ লাগাচ্ছেন না। কতটা বিপদ ডেকে আনছেন জানেন? শরীরে ভিটামিন D3 কম থাকলে ঝুঁকি বাড়ে করোনার। কিভাবে সতর্ক হবেন। ভিটামিন শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় সেটা তো সকলেই জানেন। পেশী, হাড় সহ শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিত্যদিনের তালিকায় ভরপুর প্রোটিন, ভিটামিন রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। শরীরের জন্য জরুরি তেমনি এক ভিটামিন হলো ভিটামিন D3। এটিতে কেবল হাড় আর পেশির স্বাস্থ্য ভালো রাখে তা কিন্তু নয়। যেকোনো সংক্রমন ঠেকাতে ও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে তুলতে এর বিরাট ভূমিকা রয়েছে। শুধু তাই নয় ভিটামিনে অভাবে যে করোনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, সেকথা অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনি এক তথ্য। দেখা হয়েছে, ২০২০-২১ সালে যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশের শরীরের ভিটামিন D3র ঘাটতি ছিল। সুস্থদের সংক্রামন থেকে ভিটামিন D3 বেশি মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যেসব করোনা রোগীকে ভিটামিন D3 সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়েছে তাদের অবস্থার অবনতি ঠেকানো গিয়েছে অনেক অংশেই। আর যারা সাপ্লিমেন্ট পান নি তারা ঢুকেছেন আইসিইউতে। ইংলন্ডের করা এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমীক্ষায় গবেষণা আকারে প্রকাশিত হয়েছে সাইন্টিফিক রিসার্চ পাবলিকেশন জার্নালের সেপ্টেম্বর সংখ্যায়। করোনা রুগীদের ভোগান্তির নেপাথ্যে অনেকটাই দায়ী ভিটামিন D3। যেহেতু এই ভিটামিন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, তাই করোনা সময় অনেকের ক্ষেত্রেই ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ভিটামিন D3।
এই ভিটামিনের কার্যকারিতা জানার আগে বরং জেনে নেওয়া যাক তার পরিচিতি। এটি এক ধরনের ভিটামিন D। রাসায়নিক নাম কোলিক্যালসিফেরোল। সূর্যালোক থেকে ত্বকএ এই ভিটামিন তৈরী হয়। সূর্যালোকে থাকে ১০ শতাংশ অতি বেগুনি রশমি। তারই প্রতিক্রিয়ায় এই ভিটামিন তৈরী হয়। এছাড়া খাবারেও পাওয়া যায় এই ভিটামিন। শরীরে ক্যালশিয়াম, ফসফরাস শোষনের জন্য প্রয়োজন পরে এই ভিটামিনের। এছাড়াও ফুসফুস, হাড়, আগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রনের রাখে ভিটামিন D3। ফুসফুসের কর্ম ক্ষমতা ঠিক রাখতে ও সংক্রন ঠেকাতে সাহায্য করে এই ভিটামিন। ভিটামিন D3 শরীরে সঠিক মাত্রায় থাকলে টিবি, হাঁপানি, সিওপিডি আশাঙ্কা কমে। হার্ট ফেইলিওর, ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ, সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের আশাঙ্কা কমায় ভিটামিন D3। বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর হার কমাতে পারে এই ভিটামিনের সাপ্লিমেন্ট।
ত্বকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ধরে রোদ লাগলে ভিটামিন D তৈরী হয়। কিন্তু সমীক্ষা বলছে গরম ও কালো রঙ হয়ে যাওয়ার ভয়েই বেশিরভাগ মানুষই এখন রোদ থেকে গা বাঁচিয়ে চলেন। ফলে দিনে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট খোলা শরীরে রোদ লাগানো অনেকের ক্ষেত্রেই হয়ে ওঠে না। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভিটামিন D3 তৈরী হয় না শরীরে। সেই কারণেই মেনুতে ভিটামিন D3 যোগ করতে বলছেন বিশেষজ্ঞারা। তৈলক্ত মাছ, ক্যানে ভরা টুনা, অতিরিক্ত ভিটামিন ডি মেশানো দুধ, সয়ামিল্ক, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, কমলা লেবুর রস, চিজ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কর্ড লিভার অয়েল ভিটামিন D3র ঘাটতি মেটায়ে অনেকটাই সাহায্য করে।