একেই বিভিন্ন পৌরসভার নিয়োগ দুর্নীতিতে ‘ল্যাজে গোবড়ে’ অবস্থা তৃণমূল কংগ্রেসে। আর তার পরেই লক্ষনীয় বিষয় হলো বিগত লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েত অঞ্চলে তৃণমূলের সমর্থন অটুট থাকলেও পরিসংখ্যান বলছে বহু পৌরসভা অঞ্চলে বিজেপি অনেকটা ভোট বাড়িয়ে নিয়েছে। এমন কি কলকাতার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এই অবস্থায় আসরে নেমেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ক্ষুব্ধ তৃণমূল ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুরসভারগুলির মাথা বদলের প্রস্তাব দিয়েছেন। অর্থাৎ কোপে পড়তে পারেন একাধিক পুরসভার পুরপ্রধান থেকে কাউন্সিলর। আনুমানিক ১২৫টি পুরসভায় রদবদল হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে কি কলকাতাতেও? এমন প্রশ্নও উঠছে। না, সেই সম্ভাবনা হয়তো এখনই নেই। তবে অদূর ভবিষ্যতে সেই ভাবনা যে অভিষেকের আছে তা তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে অভিষেক দেখেছেন, রাজ্যের ৬৯টি পুরসভায় লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে বিজেপি এগিয়ে। এটাকেই আশনি সংকেত বলে মনে করছে অভিষেক। তাই দ্রুত মাথা বদলের কথা তিনি ভাবছেন। কিন্তু কলকাতা পৌরনিগমের ক্ষেত্রেও কি অভিষেক মাথা বদল চাইছেন?
অভিষেকের মনের ভিতরে কি ভাবনা আছে তা কেউ জানেন না। কিন্তু এই মুহূর্তে অন্তত কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম থাকছেন। তাঁকে সারানোর চেষ্টা অন্তত এই মুহূর্তে অভিষেকের নেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। মেয়রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও এই মুহূর্তে অভিষেক মেয়রকে তাঁর চেয়ার থেকে সারাচ্ছেন না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন তার প্রধান কারণগুলো হলো –
১) প্রবীণ রাজনীতিক ফিরাদ হাকিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুবই কাছের মানুষ।
২) ফিরাদের জায়গায় বিকল্প নেতৃত্ব এই মুহূর্তে সামনে নেই।
৩) কলকাতার একটা বড়ো অংশ সংখ্যালঘু ভোটার। তাদের কথা মাথায় রেখে এখনই ফিরহাদকে সারানো যাচ্ছে না।
৪) ফিরহাদের সঙ্গে অভিষেকের সম্পর্ক যে খুব মধুর নয়, তা সকলেই জানেন। ফলে এই মুহূর্তে ফিরহাদকে সরালে দলের ভিতরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব আবার প্ৰকট হয়ে উঠবে।
তাই এই মুহূর্তে কলকাতার মেয়র স্বমহিমায় থাকছেন। তবে ২০২৬ এর নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে কলকাতা নতুন কোনো মেয়র পেতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।