‘দানা’ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে শঙ্কিত বাংলা ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চল। দানা কি দ্বিতীয় আয়লা হয়ে চলেছে? প্রশ্ন অনেকের মনে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে যে অতি গভীর নিম্নচাপ অবস্থান করছিল, তা পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এই মুহূর্তে তা উপকুল থেকে কমবেশি ৬০০ কিমি দূরে অবস্থান করছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় সেই অতি গভীর নিম্নচাপ আরও পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। আর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-য় পরিণত হতে পারে। তারপর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যেরাতের মধ্যে আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আর প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই সেটি উপকূল পার করবে। পুরী এবং সাগরদ্বীপের মধ্যে দিয়ে উপকূল পার করবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়। তখন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব চলতে পারে। ফলে শঙ্কিত বাংলা ওড়িশার সরকার।
স্থলভাগে কোথায় দানা আঘাত করবে, তা এখনও স্পষ্ট হয় নি। ওড়িশার চাঁদবালিতে ল্যান্ডফল হবে বলে একটি মহলের তরফে যে দাবি করা হচ্ছিল, সেটাও খারিজ করে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে একটি মহলের দাবি করা হচ্ছে, আপাতত যে সম্ভাব্য ‘ট্র্যাক’ দেখা যাচ্ছে, তাতে বুধবার রাত ১১ টা ৩০ মিনিট থেকে বৃহস্পতিবার ভোরের মধ্যে ওড়িশার কোথাও ল্যান্ডফল হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ের। সরকারিভাবে অবশ্য সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। আর সেই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের তিনটি জেলায় (দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর) লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আর শুক্রবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে চারটি জেলায় (দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম)। ওই জেলাগুলির কয়েকটি অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (৭০ মিলিমিটার থেকে ২০০ মিলিমিটার) হবে। আবহাওয়া অফিসের খবরে প্রকাশ, বুধবার সন্ধ্যা থেকে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল বরাবর ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় শুরু হবে। দমকা হাওয়ার বেগ কখনও কখনও ঘণ্টায় ৬০ কিমিতে পৌঁছে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝড়ের বেগ বেড়ে ঘণ্টায় ৮০ কিমি ছুঁয়ে ফেলবে। আর বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া চলবে।